ভ্রুণতত্ত্বীয় প্রমাণ (Embryological Evidences): ভূগতত্ত্ব, তুলনামূলক ভ্রুণতত্ত্ব এবং পরীক্ষামূলক ভ্রণতত্ত্ব জৈব বিবর্তনের অন্যতম প্রত্যক্ষ প্রমাণ বলে অনেকে মনে করেন। প্রতিটি বহুকোষী প্রাণী একটি জাইগোট (একটি একক কোষ) থেকে পরিস্ফুটিত হয়। জাইগোটের বিভাজন, মানুষসহ সকল বহুকোষীতেই মূলত এক রকম। যে সব পূর্ণাঙ্গ প্রাণী গঠনগত সম্বন্ধপরতায় আবদ্ধ তাদের পরিস্ফুটন পদ্ধতিও সদৃশ। পরে বিভিন্ন গোষ্ঠীতে পরিস্ফুটনরীতি বিভিন্ন রূপ নেয়। এ বিভিন্নতা অনেকটা গাছের শাখা-প্রশাখা বিস্তারের মতো অগ্রসর হতে থাকে।
মাছ, উভচর, সরিসৃপ, পাখি ও স্তন্যপায়ীর ভূণগুলোকে প্রথম অবস্থায় পরস্পর থেকে প্রায় পৃথকই। করা যায় না। পরিস্ফুটনের পরবর্তী পর্যায়ে প্রত্যেক শ্রেণির বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশিত হয়।
ভূণের এই সাদৃশ্য লক্ষ করে জার্মান বিজ্ঞানী কার্ল ভন বেয়ার (Karl von Baer, ১৮১৮) বলেছেন যে ভূণাবস্থায় একটি জীব আদি ইতিহাসকে সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করে থাকে। তাঁর মতে-
*বিশেষ বৈশিষ্ট্য আবির্ভাবের আগে সাধারণ বৈশিষ্ট্যসমূহের উত্তর ঘটে;
*সাধারণ বৈশিষ্ট্য থেকে অবশেষে বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো উদ্ভূত হয়;
*ভ্রুণাবস্থায় একটি প্রাণী তাড়াতাড়ি অন্যান্য প্রাণীর গঠন আগ করে এবং
*একটি শিশু প্রাণীকে তার নিম্নস্তরের প্রাণিগোষ্ঠীর পূর্ণাঙ্গ দশার মতো নয় বরং শিশু বা ভ্রূণীয় দশার মতো দেখায় ।
অতএব বলা যায় যে, সকল মেরুদণ্ডী প্রাণী একই পূর্বপুরুষ থেকে সৃষ্টি হয়ে পরে বিভিন্নভাবে বিকশিত হয়েছে। পরবর্তীকালে হেকেল (Haeckel) ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন প্রাণীর জীবন-ইতিহাস এবং ভ্রূণের পরিস্ফুটন পর্যবেক্ষণ করে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হন তাকে পুনরাবৃত্তি মতবাদ (Recapitulation Theory) নামে আখ্যায়িত। করা হয়। এ মতবাদ অনুযায়ী, ব্যক্তিজনি জাতিজনির পুনরাবৃত্তি করে।
অথ্যাৎ,কোন একটি জীবের ভ্রূণের পরিস্ফুটনকালে তার পুর্বপুরুষের ক্রমবিকাশের ঘটনাবলি পুনরাবৃত্তি করে।
Read more